নবীগঞ্জ সংবাদদাতা
নবীগঞ্জের মুকিমপুরে যৌতুকের দাবিতে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। টাকার জন্য গৃহবধূর গায়ে দেওয়া হয়েছে গরম খুন্তির সেঁক।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার দুই আসামিকে সেনাবাহিনী আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পরে পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয় বলে অভিযোগ উঠেছে। ৬ জুনের এ ঘটনা রোববার সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ হলে সবার নজরে আসে।
জানা যায়, নির্যাতনের মুখে গৃহবধূ লিজা আক্তার ওরফে নাজিরা আক্তার লিজা নবীগঞ্জ থানায় স্বামীসহ চারজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এরপর এ ঘটনায় দুই আসামিকে আটক করেন সেনা সদস্যরা। পরে তাদের পুলিশ ছেড়ে দেওয়ায় তোলপাড় শুরু হয়।
মামলার অভিযুক্তরা হলেন উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের মুকিমপুর গ্রামের বাসিন্দা লিজার ননদ রেবি খান, ভাশুর ফয়েজ খান, দেবর হাবিবুর খান ও স্বামী শোয়াইবুর খান। লিজা নবীগঞ্জ উপজেলার পানিউমদা ইউনিয়নের বড়চর গ্রামের ইলাছ মিয়ার মেয়ে।
মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ৬ জুন ওসমানীনগর সেনা ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন শাহরিয়ারের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি দল বিশ্বনাথ উপজেলার দশ গ্রাম এলাকায় অভিযান চালিয়ে রেবি খান ও ফয়েজ খানকে আটক করে বিশ্বনাথ থানায় সোপর্দ করে।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালে শোয়াইবুরের সঙ্গে লিজার বিয়ে হয়। স্বামীর যুক্তরাজ্যে যাওয়ার জন্য লিজার বাবার বাড়ি থেকে ২৭ লাখ টাকা দেওয়া হয়। কিছুদিন পর দেবর হাবিবুরের বিদেশ যাওয়ার জন্য তাঁর কাছে আরও ২০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। এই নিয়ে শুরু হয় নির্যাতন।
সেনাবাহিনীর মেজর মুবীন আর রহমান জানান, বাদীর লিখিত অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে সত্যতা পান তারা। আসামিদের আদালতে হাজির হওয়ার কথা থাকলেও তারা যাননি। বিষয়টি ওসমানীনগর সেনা ক্যাম্পে জানানো হলে অভিযান চালিয়ে দু’জনকে আটক করে বিশ্বনাথ থানায় সোপর্দ করা হয়। থানার ওসি আসামিদের নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তরের কথা বললেও পরে জানা যায় পুলিশ তাদের ছেড়ে দিয়েছে।
এ ব্যাপারে কথা বলতে ওসির নম্বরে কল করলে এসআই নুর মিয়া ফোন ধরে জানান ওসি ছুটিতে। ওই দুই আসামিকে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ এসে নিয়ে গেছে।
এদিকে নবীগঞ্জ থানার ওসি কামরুজ্জামান জানান, রেবি খান ও ফয়েজ খান নামের দুই আসামিকে তাদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছিল। প্রাথমিক তদন্তে তাদের অপরাধ প্রমাণ না হওয়ায় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ছেড়ে দেওয়া হয়।